মেঘের পাহাড়ে আমার গল্প গুলি [৩য় পর্ব]

" মেঘের পাহাড়ে আমার গল্প গুলি "

পর্ব: ০৩



নেহা আরে দেখ দেখ রংধনু বাহ্ কি চমৎকার...
জাফরিন মা মনি তুমি দেখতে পাচ্ছ?
হুম।
নেহা তোর মেয়ে দেখছি ঠিক তোর মতই হয়েছে হা..হা..হা
সত্যিই সবাই তাই বলে।
আচ্ছা মামা রংধনু কি?
রংধনু কি সেটা জানবার আগে মামা বলতো দেখি তুমি কোন শ্রেণীতে পড়ো ?
আমি ৫ম শ্রেণীতে পড়ি কেন তুমি জানো না?
ও আচ্ছা আমি বুড়ু হয়ে যাচ্ছিতো তাই মনে হয় ভূলে গিয়েছি মামা।
মাহিম তুই জাফরিনকে নিয়ে কথা বল আমি ওর বাবাকে নিয়ে আসি তারপর এক সাথে খেতে যাব,
আচ্ছা যা।
জাফরিন মা তোমার প্রশ্নটা যেন কি ছিল?
এই দেখ তুমি কি মন ভূলা পণ্ডিত নাকি? সব কথা গিলে ফেল?
ও আচ্ছা মা মনে পড়েছে হা হা হা....
শুনো তাহলে,
মেঘ করে বৃষ্টির পর আকাশ হয়ে যায় ঝকঝকে। আকাশে তখন আবার সূর্য ওঠে। মাঝে মাঝে বৃষ্টির পর আকাশে নানা রঙের ঝিলিক দেখা যায়। মনে হয়, নানা রঙের ধনুক আকাশ জুড়ে আছে। নানা রঙের এই ধনুককে বলে রংধনু। আরও স্পষ্ট করে বলতে গেলে, রংধনু বা রামধনু বা ইন্দ্রধনু হল একটি দৃশ্যমান ধনুরাকৃতি আলোর রেখা যা বায়ুমণ্ডলে অবস্থিত জলকণায়
সূর্যালোকের প্রতিফলন এবং প্রতিসরণের ফলে ঘটিত হয়। মা মনি তুমি যখন আরো বড় ক্লাসে উুঠবে তখন প্রতিফলন এবং প্রতিসরণ সম্পর্কে জানবে কেমন?
হুম মামা।
সাধারণত বৃষ্টির পর আকাশে সূর্যের বিপরীত দিকে রংধনু দেখা যায়। রংধনুতে সাতটি রঙের সমাহার দেখা যায়। দেখতে ধনুকের মতো বাঁকা হওয়ায় এটির নাম রংধনু। এখন মা মনি তোমার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, আকাশে কেন রংধনু দেখা যায়? উত্তর হচ্ছে… বৃষ্টির পর আকাশ পরিষ্কার মনে হয়। কিন্তূ কিছু কিছু পানির কণা তখনও বাতাসে ভাসতে থাকে। সূর্যের আলো এ পানির কণা ভেদ করে পৃথিবীতে আসে। পানির কণা ভেদ করার সময় সূর্যের আলো বেঁকে যায়। আর সূর্যের সাদা রং সাতটি রঙে ভাগ হয়ে যায়। এ রঙগুলো হলো-বেগুনি, নীল, আসমানি, সবুজ, হলুদ, কমলা ও লাল। এসাতটি রঙকে আমরা রংধনুর আকারে আকাশে দেখি। আকাশে রংধনু সব সময় সূর্যের উল্টো পাশে দেখা যায়। রংধনু উঠলেই বোঝা যায় বৃষ্টি আর হবে না।
কি খুব গল্প হচ্ছে মামার সাথে হুম?
জানো মা মামা অনেক ভাল।
তাই! হুম বুঝতে পরেছি এবার চল দুপরের খাবার খাব
মাহিম চল চল খেতে যায়,
হুম চল...
বাহ্ লঞ্চের এই ইলিশ ভাজি টা কি যে বলবো অসাধারণ তবে মায়ের সরিষার তৈলের ইলিশ ভাজিটার মতো নাহ্, সৃষ্টিও এই বিষয়ে খুব পাকা।
এই মাহিম শুরু কর,
হুম।।।
আচ্ছা মাহিম সৃষ্টিকে আনলি না কেন? কতো মজা হতো ইসস্,
আমি চুপ করে রইলাম।
মাহিম কি হলো?
মৃদু হাসি গালে রেখে বল্লাম "Missing someone and not being able to see them is the worst feeling ever"
মাহিম কি হয়েছে ভাল করে বলতো,
নেহা আমি জানতাম তুই সব কিছু জানিস আচ্ছা যাই হওক।
গত ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাব সবাই মুটামুটি কেনা কাটা নিয়ে ব্যাস্ত আমি মা আর আমার ছোট ভাই রাফসান বড় খালার বাসায় যাব খালাকে নিয়ে এবার ঈদ করব।
বড় খালার কেউ নাই খালুজান মারা গেছে গত ২ বছর আগে মাদ্রাজে তখন ওনার চিকিৎসা চলছিল।
আর বড় ছেলেটা বউ নিয়ে নেদারল্যান্ড থাকে তাই খালার মুটামুটি দেখা শুনা আমরাই করি।
সৃষ্টির ডাক এই শুনছো?
হুম
এই বার মাকেউ নিয়ে যাব আমাদের সাথে বুঝলে?
হুম ঠিক আছে নিয়ে যাব।
আর শুন আমরা কিন্তু ঈদের ১০ দিন আগেই চলে যাব বাড়ীতে।
হুম।
বাড়ীতে আনেক কাজ বাকী গিয়ে প্রথম কাজ হলো রং করা বাড়ির রং টা নষ্ট হয়ে গেছে বুঝলে? বাহিরে থাকবে আসমানি রং আর ভিতরে গোলাপি।
হুম ঠিক আছে।
ও হে যাবার আগে মার ২০ দিনের ঔষধ নিয়ে নিবে।
হুম।
এই কি হুম হুম করছো? কখন থেকে শুধু হুম হুম করছে!
সৃষ্টির ভ্রু গুলি অনেক সুন্দর যখন ভ্রু গুলি কুচকায় বাহ্ কি সুন্দর লাগে।
ভাইজান আমহেরে খালা ডাকতাছে,
হুম গিয়ে বল আসছি।
সৃষ্টি তখন গুন গুন করে আমার পছন্দের গানটা করছিল
" নাজানে কাব সে,
ওম্মিদে কুচ বাকিহে,
মুজে ফিড় বিহ্ তেড়ি ইয়াদ"
বাহ্ গানটা বেশ চমৎকার গায় সৃষ্টি।
এই শুনো আমি আর ঐশী একটু টেইলার্সে যাব।
ঠিক আছে আর সাথে রুকন কেউ নিয়ে যাবা কিন্তু ।
আচ্ছা।
পুড়ান ঢাকাতেই তৌকিরের বাসা এখানে আসলেই ওর সাথে দেখা না করে থাকতে পাড়ি না।
মা তুমি আর রাফসান উপরে যাও আমি পরে এসে তোমাদের নিয়ে যাব কেমন?
আরে তোর খালা কি বলবে চল চল,
মা আচ্ছা যাও আমি ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই চলে আসবো।
আচ্ছা মনে থাকে যেন।
হুম মা।
অনেক দিন হলো আসি নাহ্ বাসা কি ভূলে গেলাম নাকি!
দ্যাৎ ছাই
ও মনে পড়েছে একাটা জবা ফল গাছ ছিল আর একটা পাতাবাহার।
এখানেই তো কিন্তু বাড়ীটার অনেক পরিবর্তন জবা ফুল গাছটা আর নেই শুধু পাতাবাহার টা আছে বাসার গেঁটাও নতুন করেছে।
কাউকে জিঘাংসা করব নাকি?
আচ্ছা ভাইয়া এটা কি হারুন বেপারির বাসা নাহ্?
"হ ভাইসাব তয় বেপারি সাবরে খুজেন কিল্লায়? ওরাতো ফান্স গেচেগা।"
না তেমন কিছু নাহ্ ধন্যবাদ ভাইয়া।
দ্যাৎ সালা তৌকির আমাকে কিছু না বলেই চলে গেল!
ভাবতে ভাবতে পকেট হাত দিয়ে দেখি সিগারেটের পেকেট টা বাসায় ফেলে আসছি দ্যাৎ
আজ সৃষ্টি বারটা বাজাবে।
নতুন পেকেটা মনে হয় এতখনে জানালা দিয়ে ফেলে দিয়েছে।
চাচা একটা গোল্ডলিফ সিগারেট দিনতো,
পরিবেশটা কেমন জানি লাগছে মনে হচ্ছে মাটি থেকে গরম উুঠে আসছে।
বৃষ্টি নামবে কিন্তু আকাশে এক ফুটা মেঘর কণাও নেই তবে মেঘ জমতে কতখন,
নাহ্ তৌকিরের কাজটা একদম ঠিক হয় নাই,
সিগারেটের ধুয়া গুলি কেমন জানি অদ্ভুত মনে হচ্ছে ধুয়ার কুণ্ডলী পাকীয়ে কখনো মানুষের রুপ নিচ্ছে আবার হুতুম পেঁচার মতো মনে হচ্ছে।
আরে নিহার স্যার নাহ্!
সিগারেট টা দ্রুত নিভিয়ে ফেল্লাম
স্যার কেমন আছে?
একি স্যার আমার দিকে এমন অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে কেন?
তুমি যায়েদ নাহ্?
না স্যার আমি মাহিম স্যার মনে হয় ভূলে গিয়েছেন,
না না ও হে মনে পরেছে তুমি আর যায়েদ এক সাথে থাকতে তাই নাহ্?
জ্বী স্যার।
তাই বলো নামের ওলট পালট হতে পারে কিন্তু ঠিকঠাক চিনতে পেরেছি।
স্যার কোথাও যাচ্ছেন?
হ্যা একটু নীলক্ষেত যাব কিছু বই কিনবো কাজ আর কি সারা দিন বসে বসে এই বই ঘাটাঘাটি। very interesting কিছু বই,
The Curious Incident of the Dog in the Night লেখকটা মনে হয় Mark Haddon বেশ চমৎকার লিখেছে।
তা বই পড়া হয়?
হ্যা স্যার টুকটাক পড়া হয় গত সপ্তাহে শেষ করলাম To Kill a Mockingbird লেখক Harper Lee,
কেমন?
স্যার পড়তে পারেন ভাল লাগবে।
ওকে।
স্যার আমি কি দিয়ে আসবো আপনাকে?
না না সে কি সে কি আমি যেতে পারব সময় হলে বাসায় এসো কথা হবে কেমন?
জ্বী স্যার আসবো।
তাহলে আজ থাকো আমার একটু তাড়া আছে বাসায় আবার মেহমান আছে বড় মেয়েটা আসছে।
জ্বী স্যার ভাল থাকবেন।
গাড়িতে উঠেই সৃষ্টিকে ফোন দিচ্ছি কখন থেকে ধরছে না কেন! দ্যাৎ
চলবে.......
"৪র্থ পর্বের জন্য সাথেই থাকেন"
লেখক: মো: আব্দুল্লাহ আল জুম্মান।
অনেক অনেক শুভকামনা রইল। ভূল - ত্রুটি গুলি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।

Post a Comment

0 Comments